হাতিশুঁড় গাছের উপকারিতা
হাতিশুঁড় একটি অসাধারণ প্রাকৃতিক গুণ সম্পন্ন ভেষজ উদ্ভিদ। এই গাছটির রয়েছে বিস্ময়কর কিছু উপকারিতা যা মানব দেহের বিভিন্ন রোগ উপশমে কার্যকরী ভূমিকা পলন করে থাকে। আসুন আজকে জেনে নেয়া যাক এই উদ্ভিদটির গুণাগুণ সম্পর্কে-
হাতিশুঁড় একপ্রকার একবর্ষজীবী আগাছা জাতীয় উদ্ভিদ। একে হাতিশুঁড়ি, হাতিশুণ্ডি, হস্তীশুণ্ডী, শ্রীহস্তিনী, মহাশুণ্ডী ইত্যাদি নামেও ডাকা হয়। গাছটি এক দেড় ফুট লম্বা হয়। গাছের কাণ্ড ফাঁপা, নরম। সারা দেহে ছোট ছোট রোম আছে। গাছের ওপরের দিকের কাণ্ড চৌকো, নিচের দিকে অপেক্ষাকৃত গোলাকার। সংস্কৃত নাম শ্রীহস্তিনী।
বৈজ্ঞানিক নাম: Heliotropium indicum
(হেলিওট্রোপিয়াম ইনডিকাম)
এবং ইংরেজি নাম 'Indian heliotrope'।
হাতিশুড় গাছের উপকারিতা:
(১) দাদ রোগে: দেহে ছত্রাকজনিত সংক্রমণে লাল চাকা চাকা দাগ নিরাময়ে এর পাতার রস ব্যবহার করা হয়।
(২) অঙ্গ ফোলায়: অনেক সময় বিভিন্ন কারণে শরীরের বিশেষ করে পায়ের গাঁট ফুলে যায় । এমন সমস্যায় হাতিশুঁড় গাছের পাতা বাটনাতে বেটে হালকা গরম করে লাগালে দারুণ ফল পাওয়া যায়। এছাড়াও বিভিন্ন কারণে মানষ আঘাৎ প্রাপ্ত হতে পারে। যদি কেউ আঘাত প্রাপ্ত হয় তাহলে সেই সময় আঘাতের ব্যথা কমানো ও ফোলা ফোলা ভাব কমানোর জন্য এই পাতার প্রলেপ দিতে হবে। তাতে করে ফোল ফোলা ভাবটা চলে যাবে।
(৩) জ্বর , কাশি ও সর্দি: হাতিশুঁড় পাতার রস সর্দি উপশমে দারুণ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। যাদের সর্দি লাগবে তারা এই হাতিশুড়ের পাতা সেচে দুই চামচ পরিমাণ রস খেতে পারেন এতে করে আপনার সর্দি ভাল হবে। এই গাছের মূল জলের সঙ্গে ফুটিয়ে ক্বাথও তৈরি করে ব্যবহার করা হয়।
(৪) বিষাক্ত পোকার কামড়ে: বিষাক্ত কোন পোকামাকড় যদি কামড় দেয় তাহলে সেই স্থানে তাৎক্ষণিক এই উদ্ভিদটির প্রলেপ দেয়া যেতে পারে। এতে করে কামড় দেয়া জায়গায় আর জ্বালাপোড়া করবেনা
(৫) আঘাতজনিত ফোলায়: পাতা বেঁটে অল্প গরম করে লাগালে, ফোলা এবং ব্যাথা কমে যায়।
(৬) বার্গীয় ফোলা: ঊরু ও তলপেটের সন্ধিস্থানে অর্থাৎ কু’চকীতে যেটা হয় তার নামই বলা হয় বাগী, ডান বা বাম যে কোন দিকেই হতে পারে। সাধারণ: এটা একান্ত নিবাসের সময় অস্বাভাবিক অবস্থানের জন্য অথবা মেহ বা ঔপসর্গিক মেহ (গনোরিয়া) রোগগ্রস্ত লোকগুলি এই রোগের বেশি আক্রান্ত হতে দেখা যায়। এক্ষেত্রেও ঐ পাতা বেটে অল্প গরম করে লাগালেও কমে যায়।
(৭) টাইফয়েড জ্বরে: টাইফয়েড রোগে এই উদ্ভিদটির পাতা হতে পারে কার্যকরী সমাধান। এর পাতার রস হালকা গরম করে পানিতে মিশিয়ে খেলে টাইফয়েড ভাল হয়।তবে দুই থেকে তিন বারের বেশী খাওয়া উচিৎ নয়।
(৮) একজিমা: একজিমা থেকে মুক্তি পেতে হাতিশুড় গাছের পাতা থেতলে আক্রান্ত স্থানে দিন।এভাবে কিছুদিন ব্যবহারে একজিমা সেরে যাবে।
(৯) রিউম্যাটিক বাতে: রেড়ির তেলের সঙ্গে পাতার রস মিশিয়ে পাক করে গাঁটে লাগাতে হয়।
(১০) দাঁতের মাড়ি ফোলায়: দাঁতের মাড়ি ফোলা রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি হাতিশুরের মূল চিবালে মাড়ি ফোলা কমে যায়।
১১) কাটা ছেঁড়া: কাটা ছেঁড়া স্থানে হাতিশুরের পাতা থেতলে রস দিতে হবে এতে কাটা ছেঁড়া ঘুচে যাবে।
(১২) ব্রন: ব্রন হলে বা এর দাগ হয়ে গেলে হাতিশুঁড় গাছের পাতা ও তার কচি ডাল থেঁতো করে দুপুরে গোসল করতে যাবার ১ঘন্টা আগে ব্রণের ওপর প্রলেপ দিলে ব্রণ সারে এবং নতুন করে আর ব্রণ হয় না।
(১৩) ফ্যারিঞ্জাইটিস: ফ্যারিঞ্জাইটিস রোগে পতার রস অল্প গরম জলে মিশিয়ে গার্গল করা।
অসাধারণ লেখনী!অজানা অনেক কিছু সম্পর্কে অবগত হলাম।
ReplyDeleteধন্যবাদ
Delete