নবম-দশম শ্রেণির জীববিজ্ঞান চতুর্থ অধ্যায় (জীবনীশক্তি) প্রশ্ন ও উত্তর পর্ব- ০১
নবম-দশম শ্রেণির জীববিজ্ঞান চতুর্থ অধ্যায় (জীবনীশক্তি) প্রশ্ন ও উত্তর পর্ব- ০১
১. জীবনীশক্তি কী?
উত্তর : জীব কর্তৃক
তার দেহে শক্তি উৎপাদন ও ব্যবহারের মৌলিক কৌশলই হচ্ছে জীবনীশক্তি।
২. শক্তির মূল উৎস
কী?
উত্তর : শক্তির মূল উৎস হলো সূর্য।।
৩. সালোকসংশ্লেষণ কী?
উত্তর : যে
প্রক্রিয়ায় সবুজ উদ্ভিদ সূর্যালোকের উপস্থিতিতে কার্বন ডাই-অক্সাইড ও পানি থেকে
শর্করাজাতীয় খাদ্য প্রস্তুত করে, তাকে সালোকসংশ্লেষণ বলে।
৪. ফটোফসফোরাইলেশন
কী?
উত্তর:
সালোকসংশ্লেষণের সময় ADP সৌরশক্তি গ্রহণ করে ATP-তে
পরিণত হওয়ার প্রক্রিয়াকে ফটোফসফোরাইলেশন বলে।
৫. ফটোলাইসিস কী?
উত্তর : সূর্যালোক
ও ক্লোরোফিলের সহায়তায় পানি বিয়োজিত হয়ে অক্সিজেন, হাইড্রোজেন ও ইলেকট্রন উৎপন্ন হয়। এ প্রক্রিয়াকে ফটোলাইসিস বলে।
৬ আত্তীকরণ শক্তি
কী?
উত্তর : ATP এবং
NADPH+H+-কে
আত্তীকরণ শক্তি বলে।
৭. CAM কী?
উত্তর : Crassulacean Acid
metabolism-কে সংক্ষেপে CAM প্রক্রিয়া বলে।
৮. শ্বসন কী?
উত্তর : যে জৈব
রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় জীবদেহ যৌগিক খাদ্যদ্রব্য জারিত করে সরল দ্রব্যে পরিণত করে
এবং শক্তি উৎপন্ন করে, তাকে শ্বসন বলে।
৯. পাইরুভিক
এসিডের সংকেত কী?
উত্তর : পাইরুভিক
এসিডের সংকেত হলো
১০. জৈবমুদ্রা কাকে বলে?
উত্তরঃ যেসব শক্তি সমৃদ্ধ জৈব যৌগ শক্তি জমা করে রাখে এবং প্রয়োজন অনুসারে অন্য প্রক্রিয়ায় শক্তি সরবরাহ করে তাকে জৈবমুদ্রা বলে।
১১. AMP-এর পূর্ণরূপ কী?
উত্তর : AMP-এর
পূর্ণরূপ হলো Adenosine Monophosphate.
১২. ATP-এর পূর্ণরূপ কী?
উত্তর : ATP-এর পূর্ণরূপ হলো Adenosine Triphosphate.
১৩. NADPH2-এর পূর্ণরূপ কি?
উত্তরঃ NADPH2-এর পূর্ণরূপ– Nicotinamide Adenine
Dinucleotide Phosphate।
১৪. ATP-কে জৈবমুদ্রা বা শক্তিমুদ্রা (Biological coin বা energy coin) বলা হয় কেন?
উত্তর : ফটোফসফোরাইলেশন প্রক্রিয়ায় ATP উৎপন্ন হয়। ATP শক্তি জমা করে রাখে এবং প্রয়োজন অনুসারে অন্য বিক্রিয়ায় শক্তি সরবরাহ করে। এ জন্য ATP-কে জৈবমুদ্রা বা শক্তিমুদ্রা (Biological coin বা energy coin) বলা হয়।
১৫. জলজ উদ্ভিদে সালোকসংশ্লেষণের হার স্থলজ উদ্ভিদ থেকে বেশি কেন?
উত্তর : যে
প্রক্রিয়ায় সূর্যালোকের উপস্থিতিতে কার্বন ডাই-অক্সাইড ও পানি থেকে শর্করাজাতীয়
খাদ্য প্রস্তুত করে, তাকে সালোকসংশ্লেষণ বলে।
আলো
-------->6CO2+12H2O C6H12O6+6H2O+602
ক্লোরোফিল
জলজ উদ্ভিদ পানিতে
দ্রবীভূত CO2 গ্রহণ
করে। বায়ুমণ্ডলে ০.০৩% এবং পানিতে ০.৩% CO2 আছে। এ জন্য জলজ উদ্ভিদে
সালোকসংশ্লেষণের হার স্থলজ উদ্ভিদ থেকে বেশি।
১৬. সবাত শ্বসন কাকে বলে?
উত্তরঃ যে শ্বসন প্রক্রিয়ায় অক্সিজেনের প্রয়োজন হয় এবং শ্বসনিক বস্তু সম্পূর্ণভাবে জারিত হয়ে CO2, পানি ও বিপুল পরিমাণ শক্তি উৎপন্ন হয়, তাকে সবাত শ্বসন বলে।
১৭. অবাত শ্বসন বলতে কী বোঝায়?
উত্তরঃ যে শ্বসন প্রক্রিয়া অক্সিজেনের
অনুপস্থিতিতে হয় তাকে অবাত শ্বসন বলে। অর্থাৎ যে শ্বসন প্রক্রিয়ায় কোনো শ্বসনিক
বস্তু অক্সিজেনের সাহায্য ছাড়াই কোষ মধ্যস্থ এনজাইম দ্বারা আংশিকরূপে জারিত হয়ে
বিভিন্ন প্রকার জৈব যৌগ (ইথাইল অ্যালকোহল, ল্যাকটিক এসিড ইত্যাদি), CO2 ও সামান্য পরিমাণ শক্তি উৎপন্ন করে তাকে অবাত শ্বসন বলে।
১৮. প্রস্বেদন কাকে বলে?
উত্তরঃ উদ্ভিদ যে শারীরতাত্ত্বীক প্রক্রিয়ায়
তার বায়বীয় অঙ্গের মাধ্যমে প্রয়োজনের অতিরিক্ত পানি বাম্পাকারে বের করে দেয় তাকে
প্রস্বেদন বলে।
১৯. গ্লাইকোলাইসিস বলতে কী বোঝ?
উত্তরঃ যে প্রক্রিয়ায় কোষের সাইটোপ্লাজমে এক অণু গ্লুকোজ বিভিন্ন রাসায়নিক বিক্রিয়ায় জারিত হয়ে দুই অণু পাইরুভিক এসিড তৈরি করে তাকে গ্লাইকোলাইসিস বলে। এই ধাপে চার অণু ATP এবং দুই অণু NADH+H+ উৎপন্ন হয়। এ প্রক্রিয়ার জন্য কোনো অক্সিজেনের প্রয়োজন পড়ে না। তাই গ্লাইকোলাইসিস সবাত ও অবাত উভয় প্রকার শ্বসনেরই প্রথম পর্যায়।
২০. ফটোলাইসিস কী?
উত্তরঃ সূর্যালোক ও ক্লোরোফিলের সহায়তায় পানি
বিয়োজিত হয়ে অক্সিজেন,
হাইড্রোজেন ও ইলেকট্রন উৎপন্ন হওয়ার প্রক্রিয়াই হলো ফটোলাইসিস।
২১. কো-এনজাইম কাকে বলে?
উত্তরঃ এনজাইমের প্রোসথেটিক গ্রুপটি কোনো জৈব রাসায়নিক পদার্থ হলে সেই এনজাইমকে কো-এনজাইম বলে।
২২. সালোকবিভাজন কাকে বলে?
উত্তরঃ সূর্যালোক ও ক্লোরোফিলের সহায়তায় পানি
বিয়োজিত হয়ে অক্সিজেন,
হাইড্রোজেন ও ইলেকট্রন উৎপন্ন হওয়ার প্রক্রিয়াকে সালোকবিভাজন বলে।
২৩.C4 উদ্ভিদ বলতে কী বোঝ?
উত্তরঃ যে সকল উদ্ভিদে একই সাথে হ্যাচ ও
স্ল্যাক চক্র এবং ক্যালভিন চক্র পরিচালিত হয় তাদের C4 উদ্ভিদ বলা হয়। এসব উদ্ভিদ উচ্চ তাপমাত্রায়
খাপ খাইয়ে নিতে সক্ষম। C3 উদ্ভিদের তুলনায় C4 উদ্ভিদে সালোকসংশ্লেষণ হার বেশি এবং উৎপাদন
ক্ষমতাও বেশি। সাধারণত ভুট্টা, আখ, ঘাসজাতীয়
উদ্ভিদ ইত্যাদিতে C4 চক্র পরিচালিত হয়। তাই এরা C4উদ্ভিদ নামে পরিচিত।
২৪. উদ্ভিদদেহে সংঘটিত পানির ফটোলাইসিস বলতে কী বোঝায়?
উত্তরঃ উদ্ভিদদেহে সালোকসংশ্লেষণ সংঘটনের সময়
পানির ফটোলাইসিস ঘটে। এক্ষেত্রে সূর্যালোক ও ক্লোরোফিলের সহায়তায় পানি বিয়োজিত হয়ে
অক্সিজেন, হাইড্রোজেন
ও ইলেকট্রন উৎপন্ন হয়। এ প্রক্রিয়াকেই পানির ফটোলাইসিস বলে।
২৫. অবাত শ্বসন প্রক্রিয়ায় কম শক্তি উৎপন্ন হয় কেন?
উত্তরঃ অবাত শ্বসন দুটি ধাপে সম্পন্ন হয়।
প্রথম ধাপে এক অণু গ্লুকোজ থেকে দুই অণু পাইরুভিক এসিড, চার অণু ATP এবং দুই অণু NADH+H+ উৎপন্ন হয়। এর মধ্যে দুই অণু ATP
খরচ হয়ে যায়। অন্যদিকে অবাত শ্বসনে ৩৮টি ATP উৎপন্ন
হয়। অবাত শ্বসনের দ্বিতীয় ধাপে সাইটোপ্লাজমে অবস্থিত এনজাইমের কার্যকারিতায়
পাইরুভিক এসিড অসম্পূর্ণরূপে জারিত হয়ে CO2 এবং ইথাইল অ্যালকোহল অথবা
শুধু ল্যাকটিক এসিড উৎপন্ন হয়। এসব কারণে অবাত শ্বসন প্রক্রিয়ায় কম শক্তি উৎপন্ন হয়।
২৬. CO2 কীভাবে পাতার অভ্যন্তরে পৌছায়?
উত্তরঃ পাতার অভ্যন্তরে প্রবেশের ক্ষেত্রে CO2 প্রথমে পত্ররন্ধ্রের ভেতর দিয়ে পত্ররন্ধের
পেছনের বায়ুকুঠুরিতে পৌঁছায়। বায়ুকুঠুরি হতে CO2 ব্যাপন প্রক্রিয়ায় মেসোফিল
টিস্যুর ক্লোরোপ্লাস্টে প্রবেশ করে। এভাবে বায়ুমণ্ডল থেকে CO2 পাতার অভ্যন্তরে প্রবেশ করে।
২৭. বটগাছের নিচে রাতে কোনো ব্যক্তি অবস্থান করলে শ্বাস-প্রশ্বাসে কষ্ট হয় কেন?
উত্তরঃ রাত্রিবেলা সালোকসংশ্লেষণ বন্ধ থাকে
বলে অক্সিজেন উৎপন্ন হয়। অন্যদিকে শ্বসন দিবারাত্রি ২৪ ঘণ্টাই চলতে থাকে, যাতে কার্বন ডাইঅক্সাইড
নির্গত হয়। বটগাছের পাতা ও লেন্টিসেলের সংখ্যা বেশি থাকে। ফলে শ্বসনে নির্গত
কার্বন ডাইঅক্সাইডও বেশি নির্গত হয়, যা শ্বাসরোধের কারণ হতে
পারে। এজন্যই রাতে বটগাছের নিচে কোনো ব্যক্তি অবস্থান করলে শ্বাস-প্রশ্বাসে কষ্ট
হয়।
Comments
Post a Comment