নবম-দশম শ্রেণির জীববিজ্ঞান চতুর্থ অধ্যায় (জীবনীশক্তি) প্রশ্ন ও উত্তর পর্ব- ০৪ ( শ্বসন )
নবম-দশম শ্রেণির জীববিজ্ঞান চতুর্থ অধ্যায় (জীবনীশক্তি) প্রশ্ন ও উত্তর পর্ব- ০৪ (শ্বসন)
শ্বসন যে কোনো জীবের শারীরিক পরিচালনায় অন্যতম অংশ, মানুষসহ বিভিন্ন
জীবের দেহকোষে সবসময় নানারকম জৈবিক ক্রিয়া ও প্রক্রিয়া চলছে। এই জৈবিক ক্রিয়া ও প্রক্রিয়া গুলো নিয়ন্ত্রণের জন্য কোষের শক্তির
প্রয়োজন।প্রত্যেকটি জীব তার এই ক্রিয়া নিয়ন্ত্রণের জন্য খাদ্য গ্রহণ করে আর সেই
খাদ্য থেকে শক্তি অর্জন করে।
শ্বসন কাকে বলে ?
যে জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় দ্বারা অক্সিজেনের উপস্থিতিতে বা অনুপুস্থিতিতে খাদ্যের দৈহিক জারণের ফলে খাদ্য স্থিতিশক্তি গতি শক্তিতে রূপান্তরিত হয় ও মুক্ত হয় তাকে শ্বসন বলে।
শ্বসনের বৈশিষ্ট্য :
- শ্বসন একটি অপচিতিমূলক বিপাক ক্রিয়া।
- এর ফলে জীবের শুস্ক ওজন হ্রাস পায়।
- শ্বসন একটি তাপমোচী প্রক্রিয়া।
শ্বসন এর প্রকারভেদ :
শ্বসন দুই প্রকারের। সবাত শ্বসন এবং অবাত শ্বসন।
সবাত শ্বসন :
যে শ্বসন পদ্ধতি বায়ুজীবী জীবকোষে
শ্বসন বস্তু মুক্ত অক্সিজেন উপস্থিত সম্পূর্ণরূপে জারিত হয়ে জল এবং কার্বন ডাই অক্সাইড পরিণত হয় এবং শ্বসন বস্তু সম্পূর্ণরূপে নির্গত হয় তাকে সবাত শ্বসন বলে।
C6H12O6 + 6 O2 + 6 H2O + 38 ADP + 38 Pi = 6 CO2 + 12H2O + 38 ATP
সবাত শ্বসন এর স্থান: এককোষী প্রাণী অ্যামিবা থেকে শুরু করে উন্নত শ্রেণীর বহুকোষী উদ্ভিদ এবং প্রাণীদেহে প্রতিটি সজিব কোষে এই ধরণের শ্বসন সংঘটিত হয়।
এই ধরণের শ্বসন কোষস্থ খাদ্য প্রধানত গ্লুকোজ কোষের সাইটোপ্লাজমে অক্সিজেন এর উপস্থিতিতে বা অনুপস্থিতিতে কতগুলি উৎসেচকের সহায়তায় আংশিক ভাবে জারিত হয়ে পাইরুভিক অ্যাসিড এ পরিণত হয়। এই প্রক্রিয়াকে EMP পথ বলা হয়।
1 গ্রাম অনু গ্লুকোজ থেকে 686 কিলোক্যালরি শক্তি উৎপন্ন হয়।
অবাত শ্বসন:
যে শ্বসন পদ্ধতিতে
অবায়ুজীবী জীব কোষে মুক্ত অক্সিজেনের অনুপস্থিতিতে শ্বসন বস্তু অক্সিজেনযুক্ত
যৌগের অক্সিজেন কর্তৃক জারিত হয়ে কার্বন ডাই অক্সাইড ও জলে পরিণত হয় এবং শ্বসন বস্তু মধ্যস্তশক্তির আংশিক নির্গমন ঘটে তাকে অবাত শ্বসন বলে।
C6H12O6 —এনজাইম–> 2C2H5OH + 2CO2 + শক্তি ( 56 k Cal / Mole )
অবাত শ্বসন এর স্থান: অবাত শ্বসন ডিনাইটিফাইং ব্যাকটেরিয়া, সালফার ব্যাকটেরিয়া, মিথেন ব্যাকটেরিয়া তে দেখা যায়।
সবাত শ্বসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন
হতে চারটি ধাপ অতিক্রম করতে হয়।
এখানে ধাপগুলো বিশ্লেষণ করা হলো—
ধাপ-১ : গ্লাইকোলাইসিস : এ প্রক্রিয়ায় এক অণু গ্লুকোজ বিভিন্ন রাসায়নিক বিক্রিয়ায় জারিত হয়ে দুই অণু
পাইরুভিক এসিড উৎপন্ন করে। এ ধাপে চার অণু ATP
(দুই অণু খরচ হয়ে যায়) এবং দুই
অণু NADH+H+ উৎপন্ন হয়। এ প্রক্রিয়ায় কোনো অক্সিজেন
প্রয়োজন হয় না। তাই গ্লাইকোলাইসিস সবাত ও অবাত শ্বসনেরই প্রথম ধাপ। ধাপগুলো কোষের
সাইটোপ্লাজমে ঘটে থাকে।
ধাপ-২ : অ্যাসিটাইল কো-এ সৃষ্টি : গ্লাইকোলাইসিসে সৃষ্ট প্রতি অণু পাইরুভিক এসিড পর্যায়ক্রমে বিক্রিয়া শেষে ২ কার্বনবিশিষ্ট এক অণু অ্যাসিটাইল কো-এ এক অণু CO2 এবং এক অণু NADH +H+ উৎপন্ন করে। (দুই অণু পাইরুভিক এসিড থেকে দুই অণু অ্যাসিটাইল কো- এনজাইম, দুই অণু CO2 এবং দুই অণু NADH+H+ উৎপন্ন হয়)।
ধাপ-৩ : ক্রেবস চক্র : ক্রেবস চক্রে ২ কার্বনবিশিষ্ট অ্যাসিটাইল CO-A জারিত হয়ে দুই অণু CO2 উৎপন্ন করে। এ পর্যায়ে অ্যাসিটাইল কো-এ মাইটোকন্ড্রিয়াতে প্রবেশ করে এবং ক্রেবস চক্রে অংশগ্রহণ করে। এ চক্রের সব বিক্রিয়া মাইটোকন্ড্রিয়াতে সংঘটিত হয়। CO2 ছাড়াও এ চক্রে ১ অণু অ্যাসিটাইল কো-এ থেকে ৩ অণু NADH+H+, ১ অণু FADH2, ১ অণু GTP (গুয়ানোসিন ট্রাই-ফসফেট) উৎপন্ন হয়। অতএব দুই অণু অ্যাসিটাইল CO-A থেকে ৪ অণু CO2 ৬ অণু NADH +H+, দুই অণু FADH2 এবং দুই অণু GTP উৎপন্ন হয়।
ধাপ-৪ : ইলেকট্রন প্রবাহতন্ত্র : এ প্রক্রিয়ায় উপরোক্ত তিনটি ধাপে উৎপন্ন NADH +H+, FADH2 জারিত হয়ে ATP, পানি, ইলেকট্রন ও প্রোটন উৎপন্ন হয়। উচ্চ শক্তিসম্পন্ন ইলেকট্রনগুলো ইলেকট্রন প্রবাহতন্ত্রের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার সময় শক্তি নির্গত হয়। সে শক্তি ATP তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। ইলেকট্রন প্রবাহতন্ত্র মাইটোকন্ড্রিয়ায় সংঘটিত হয়।
অবাত শ্বসনের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা:
দুটি ধাপে অবাত শ্বসন হয়ে থাকে। ধাপ দুটি হলাে:
ধাপ-১: গ্লুকোজের অসম্পূর্ণ জারণ: এই ধাপে এক অণু গ্লুকোজ
থেকে দুই অণু পাইভিক এসিড, চার
অণু ATP (এর মধ্যে দুই অণু ব্যবহার
হয়ে যায়) এবং দুই অণু NADH+H' উৎপন্ন হয়। অর্থাৎ আপাতদৃষ্টিতে এ পর্যন্ত বিক্রিয়া সবাত
শ্বসনের গ্লাইকোলাইসিসের অনুরূপ। তবে উৎপন্ন পাইবুভিক এসিড পরবর্তী ধাপে বিজারিত
হয়ে যায় বলে অবাত শ্বসনে গ্লুকোজের অসম্পূর্ণ জারণ ঘটে- এমনটা | বিবেচনা করা হয়।
ধাপ 2: পাইভিক অ্যাসিডের বিজারণ: সাইটোপ্লাজমে অবস্থিত এনজাইমের
কার্যকারিতায় | পাইভিক
অ্যাসিড বিজারিত হয়ে co, এবং
ইথাইল অ্যালকোহল অথবা শুধু ল্যাকটিক অ্যাসিড উৎপন্ন করে। এক্ষেত্রে গ্লাইকোলাইসিসে
উৎপন্ন বিজারিত NAD (অর্থাৎ
NADHH) জারিত হয়ে | যে ইলেকট্রন, প্রােটন ও শক্তি নির্গত
করে, তা ব্যবহৃত হয় পাইভিক
অ্যাসিড থেকে ল্যাকটিক অ্যাসিড বা ক্ষেত্রবিশেষে ইথানল উৎপাদনের জন্য। অন্যদিকে, অক্সিজেনের অভাবে তখন
অক্সিডেটিভ ফসফোরাইলেশনও চলে না। তাই অবাত শ্বসনের ক্ষেত্রে এক অণু গ্লুকোজের
গ্লাইকোলাইসিসে নিট মাত্র 2 অণু ATP পাওয়া
শ্বসনের প্রভাবক
সমূহ হলো:
·
বাহ্যিক প্রভাবক
o
তাপমাত্রা
o
অক্সিজেন
o
জল
o
আলো
o
কার্বন ডাই অক্সাইড
·
অভ্যন্তরীণ প্রভাবক
o
জটিল খাদ্যদ্রব্যের পরিমাণ
o
উৎসেচক
o
কোষের বয়স
o
কোষের অজৈব লবণ
o
মাটিস্থ অজৈব লবণ
o
কোষ মধ্যস্থ পানি
ক. বাহ্যিক প্রভাবক : বাহ্যিক প্রভাবকসমূহ হলো- তাপমাত্রা, অক্সিজেন, পানি, আলো, কার্বন ডাই-অক্সাইড প্রভৃতি
খ. অভ্যন্তরীণ প্রভাবক : অভ্যন্তরীণ প্রভাবকসমূহ হলো-
খাদ্যদ্রব্য,
উৎসেচক, কোষের বয়স, অজৈব লবণ, কোষমধ্যস্থ পানি প্রভৃতি
এদের বর্ণনা নিম্নরূপ:
ক. বাহ্যিক প্রভাবক : বাহ্যিক প্রভাবকসমূহ হলো-
তাপমাত্রা : ২০ সেলসিয়াস এর নিচে এবং ৪৫ সেলসিয়াস এর উপরের
তাপমাত্রায় শ্বসন হার কমে যায়। শ্বসনের জন্য উত্তম তাপমাত্রা ২০ সেলসিয়াস।
অক্সিজেন : সবাত শ্বসনে পাইরুভিক এসিড জারিত হয়ে অক্সিজেন ও পানি উৎপন্ন করে। কাজেই অক্সিজেনের অভাবে সবাত শ্বসন কোনোক্রমেই চরতে পারে না।
পানি : পরিমিত পানি সরবারাহ শ্বসন ক্রিয়াকে স্বাভাবিক রাখে।
কিন্তু অত্যন্ত কম কিংবা অতিরিক্ত পানির উপস্থিতিতে শ্বসন প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়।
আলো : শ্বসন কার্যে আলোর প্রয়োজন পড়ে না সত্যি কিন্তু দিনের
বেলা আলোর উপস্থিতিতে পত্ররন্ধ্র খোলা থাকায় অক্সিজেন গ্রহণ ও কার্বন ডাই-অক্সাইড ত্যাগ করা সহজ হয় বলে
শ্বসন হার একটু বেড়ে যায়।
কার্বন ডাইাক্সাইড : বায়ুতে কার্বন ডাই-অক্সাইড এর ঘনত্ব বেড়ে গেলে শ্বসন
হার কিঞ্চিত কমে যায়।
খ. অভ্যন্তরীণ প্রভাবক : অভ্যন্তরীণ প্রভাবকসমূহ হলো-
খাদ্যদ্রব্য : শ্বসন প্রক্রিয়ায় খাদ্যদ্রব্য (শ্বসনিক
বস্তু) ভেঙ্গে শক্তি,
পানি ও কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গত করে তাই
কোষে খাদ্যদ্রব্যের পরিমাণ ও ধরন শ্বসন হার নিয়ন্ত্রন করে।
উৎসেচক : শ্বসন প্রক্রিয়ায় বহুবিধ এনজাইম বা উৎসেচক
সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে। কাজেই এনজাইমের ঘাটতি শ্বসন হার কমিয়ে দেয়।
কোষের বয়স : অল্পবয়স্ক কোষে বিশেষ করে ভাজক কোষে
প্রোটোপ্লাজম বেশি থাকে বলে বয়স্ক কোষ অপেক্ষা শ্বসন হার বেশি হয়।
শ্বসন এর গুরুত্বঃ
- উদ্ভিদ:
২. খাদ্য প্রস্তুত করতে।
৩. খনিজ লবণ পরিশোধনে।
৪. কোষ বিভাজন ও দৈহিক বৃদ্ধিতে।
৫. এনজাইম ও জৈব এসিড উৎপাদনে।
- প্রাণী:
২. পানির ভারসাম্য বজায় রাখতে।
৩. তাপ নিয়ন্ত্রণে।
৪. এসিড ও ক্ষারের সাম্যতা বজায় রাখতে।
সবাত শ্বসন ও অবাত শ্বসনের মধ্যে পার্থক্য:
সবাত শ্বসন ও অবাত শ্বসনের মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ-
সবাত শ্বসন | অবাত শ্বসন |
1. সবাত শ্বসনে মুক্ত অক্সিজেনের (O2) উপস্থিতিতে ঘটে। | 1. অবাত শ্বসনে মুক্ত অক্সিজেনের অনপস্থিতিতে ঘটে। |
2. সবাত শ্বসন বস্তু সম্পূর্ণরূপে জারিত হয়। | 2. অবাত শ্বসন বস্তু আংশিক জারিত হয় । |
3. সবাত শ্বসন বায়ুজীবি জীবে ঘটে । | 3. অবাত শ্বসন অবায়ুজীবি জীবে ঘটে । |
4. সবাত শ্বসন প্রান্তীয় হাইড্রোজেন গ্রাহক হল আণবিক অক্সিজেন । | 4. অবাত শ্বসন প্রান্তীয় হাইড্রোজেন গ্রাহক অক্সিজেনযুক্ত যৌগের অক্সিজেন। |
5. সবাত শ্বসনের উপজাত বস্তু CO2 ও H2O । | 5. অবাত শ্বসনে উপজাত বস্তু CO2, H2O এবং অন্যান্য বস্তু। |
৬. সবাত শ্বসন সম্পূর্ণ শক্তি অর্থাৎ 686 Kcal শক্তি উৎপন্ন হয় । | ৬. অবাত শ্বসন আংশিক শক্তি অর্থাৎ 50 Kcal শক্তি উৎপন্ন হয়। |
৭. সবাত শ্বসন প্রধানত তিনটি পর্যায়ে হয় -গ্লাইকোলাইসিস, ক্রেবস চক্র এবং প্রান্তীয় শ্বসন । | ৭. অবাত শ্বসন দুটি পর্যায়ে সম্পর্ণ হয় – গ্লাইকোলাইসিস এবং পাইরুভিক অ্যাসিডের অসম্পূর্ণ জারণ । |
৮. সবাত শ্বসন সাইটোপ্লাসম ও মাইট্রোকন্ড্রিয়ার মধ্যে ঘটে । | ৮. অবাত শ্বসন মাইট্রোকন্ড্রিয়ার বাইরে অর্থাৎ সাইটোপ্লাসমে ঘটে। |
গ্লাইকোলাইসিস প্রক্রিয়ার বর্ণনা কর।
যে প্রক্রিয়ায় কোষের সাইটোসল এর বিভিন্ন এনজাইম এর প্রভাবে 6 কার্বন বিশিষ্ট এক অণু গ্লুকোজ কতগুলো ধারাবাহিক প্রাণ রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে অক্সিজেনের উপস্থিতিতে 3 কার্বন বিশিষ্ট দুই অনু পাইরূভিক এসিড এবং অক্সিজেনের অনুপস্থিতিতে দুই অনু ল্যাকটিক অ্যাসিড এ পরিণত হয় তাকে গ্লাইকোলাইসিস বলে। গ্লাইকোলাইসিস এর প্রতিষ্ঠাতা তিনজন বিজ্ঞানী EMBDEN, Meyerhof ও parnas। প্রতিষ্ঠাতা তিন বিজ্ঞানীর নাম অনুযায়ী গ্লাইকোলাইসিস কে EMP পাথওয়ে বলা হয়। এই প্রক্রিয়া মূলত কোষের সাইটোপ্লাজমে ঘটে, তাই একে সাইটোপ্লাজমিক শ্বসন ও বলা হয়। সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি নিম্নরূপ:
১. গ্লুকোজ, ATP থেকে একটি ফসফেট গ্রহণ করে গ্লুকোজ ৬-ফসফেটে পরিণত হয়। এ বিক্রিয়ায়
হেক্রোকাইনেজ এনজাইম ক্রিয়াশীল হয় এবং একটি ADP সৃষ্টি হয়। বিক্রিয়াটি একমুখী।
২. গ্লুকোজ-৬ ফসফেট, ফ্রুকটোজ-৬ ফসফেটে রূপান্তরিত হয়। এ বিক্রিয়ায় ফসফোগ্লুকো আইসোমারেজ এনজাইম
ক্রিয়াশীল হয়। বিক্রিয়াটি দ্বিমুখী।
৩. ফ্রুক্টোজ-৬ ফসফেট ATP থেকে একটি ফসফেট গ্রহণ করে ফ্রুক্টোজ-১ ৬-বিসফসফেটে পরিণত হয়। এ বিক্রিয়ায় ফসফোফ্রুক্টোকাইনেজ
এনজাইম ক্রিয়াশীল হয় এবং একটি ADP সৃষ্টি হয়। বিক্রিয়াটি একমুখী।
চিত্র : গ্লাইকোলাইসিস
প্রক্রিয়ার ছক।
৪। ফ্রুক্টোজ-১-৬ বিসফসফেট ভেঙে
১ অণু ৩-ফসফোগ্লিসারলডিহাইড এবং ১ অণু ডাই-হাইড্রক্সি অ্যাসিটোন ফসফেট সৃষ্টি হয়।
এ বিক্রিয়ায় অ্যালডোলেজ এনজাইম ক্রিয়াশীল হয়। আইসোমারেজ এনজাইমের কার্যকারিতায় এরা
একটি অন্যটিতে পরিবর্তিত হতে পারে। উভয় বিক্রিয়া দ্বিমুখী।
৫। ৩-ফসফোগ্লিসারলডিহাইড ১ অণু
অজৈব ফসফেট গ্রহণ করে ১,৩-বিসফসফোগ্লিসারিক এসিডে পরিণত হয়। এ বিক্রিয়ায় ফসফোগ্লিসারাইড
ডিহাইড্রোজিনেজ ক্রিয়াশীল হয়। অজৈব
ফসফেট ও NAD অংশগ্রহণ করে এবং NADH+H+ সৃষ্টি হয়। বিক্রিয়াটি দ্বিমুখী।
৬। ১,৩-বিসফসফোগ্লিসারিক
এসিড ফসফেট হারিয়ে ৩-ফসফোগ্লিসারিক এসিডে পরিণত হয়। এ বিক্রিয়ায় ফসফোগ্লিসারিক
এসিড কাইনেজ ক্রিয়াশীল হয় এবং ADP থেকে ১টি ATP তৈরি হয়। বিক্রিয়াটি দ্বিমুখী।
৭। ৩-ফসফোগ্লিসারিক এসিড, ফসফোগ্লিসারোমিউটেজ এনজাইমের কার্যকারিতায় ২-ফসফোগ্লিসারিক এসিডে পরিণত হয়।
বিক্রিয়াটি দ্বিমুখী।
৮। ২-ফসফোগ্লিসারিক এসিড, ইনলেজ এনজাইমের কার্যকারিতায় ফসফোইনল পাইরুভিক এসিডে পরিণত হয়। বিক্রিয়াটি
দ্বিমুখী।
৯। ফসফোইনল পাইরুভিক এসিড, পাইরুভিক এসিড কাইনেজ এনজাইমের কার্যকারিতায় পাইরুভিক এসিডে পরিণত হয়। এ
বিক্রিয়ায় ADP থেকে একটি ATP তৈরি হয়। বিক্রিয়াটি একমুখী।
গ্লুকোজ থেকে পাইরুভিক এসিড
সৃষ্টির মাধ্যমেই গ্লাকোলাইসিস প্রক্রিয়ার সমাপ্তি ঘটে।
Comments
Post a Comment